Dhammadhaj Jatak by Ms Alpana Basu ধর্মধ্বজ জাতক – আলপনা বসু

Dhammadhaj Jatak by Ms Alpana Basu ধর্মধ্বজ জাতক – আলপনা বসু

ধর্মধ্বজ জাতক ( জাতক কথা ২২০)

জাতক তথাগত সম্মুখ সম্বুদ্ধ কর্তৃক তাঁর পূর্ব জন্মের জীবন কথা বৃত্তান্ত।  যা তিনি তাঁর শ্রমনদের ও সাধারন জনমানসের উপলব্ধির জন্য সহজ করে বোঝানোর নিমিত্তে  নিজের পূর্ব জন্মের কাহিনীর মাধ্যমে সদ্ধর্মের দেশনা দিয়ে থাকতেন। তেমনই একটি জাতক হলো “ ধম্মধ্বজ জাতক

এই জাতকে আমরা দেখতে পাবো দেবদত্ত কতৃক শাস্তার প্রাণনাশের চেষ্টার পরিপেক্ষিতে, তথাগত বেনুবন বিহারে তাঁর পূর্ব জন্মের বৃতান্ত ব্যাখ্যা করেন। সেই জন্মেও দেবদত্ত কি ভাবে তাঁর প্রাণ হরন করতে চেয়েছিলো সেই কথা তিনি ভিক্ষুদের বলেন।

পুরাকালে বারাণসীতে যশঃপাণি নামে এক রাজা ছিলেন ও কালক নামে তাঁর এক সেনাপতি ছিলো। বোধিসত্ত্ব ছিলেন রাজপুরোহিত। তিনি ধর্ম্মধ্বজ নামেও অভিহিত ছিলেন। ছত্রপাণি নামক আর এক ব্যক্তি সেই সময় রাজার মুকুট, মস্তকাভরন ইত্যাদি তৈরী করতেন। যশঃপাণি অতীব সুশাসক ছিলেন্, কিন্তু ওনার সেনাপতি কালক অতিশয় উৎকোচলোভি ও পরোক্ষে পরনিন্দা করতেন। তিনি উৎকোচ নিয়ে অন্যায় ভাবে একের সম্পত্তি অন্যকে দিতেন।

একদিন এক ব্যক্তি মোকদ্দমায় পরাজিত হয়ে খুব কাঁদতে কাঁদতে বিচারালয় থেকে বাইরে যাবার সময় বোধিস্বত্ত্ব ধর্ম্মধ্বজের সাথে তার দেখা হয়, তিনি তাঁর পদতলে লুন্ঠিত হয়ে নিজের পরাজয়ের বৃতান্ত জানালেন আর অভিযোগও করলেন যে আপনার মত ধর্মিকরা রাজাকে ধর্ম্ম ও অর্থ সম্পর্কে পরামর্শ দেন, অথচ রাজার সেনাপতি কালক উৎকোচ নিয়ে অন্যায় ভাবে একের সম্পত্তি অন্যকে পাইয়ে দিচ্ছে। আপনি এর সুবিচার করুন। পরাজিত ব্যক্তির কথা বোধিস্বত্ত্বের মনে দয়ার সঞ্চার করে তিনি তার বিষয়টি পুনরায় বিচার করার জন্য বিচারগৃহে গিয়ে তাকে সুবিচার পাইয়ে দেন ও তার সম্পত্তি তাকে ফিরিয়ে দেন। সমবেত জনগন তাঁকে “সাধু সাধু” বলে অনুমোদন ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে। সেই সাধুবাদ এত উচ্চস্বরে উচ্চারিত হয় যে তার ধ্বনি রাজার কর্ণগোচর হয়। রাজা এর কারন জানতে চাইলে, অনুচরেরা জানায় যে পন্ডিত ধর্ম্মধ্বজ দুর্বিচারের প্রতিবিচার করে আসল লোককে সম্পত্তি প্রত্যার্পন করাতে সমবেত সভামন্ডলি সাধুবাদ জ্ঞাপন করছেন। এতে রাজা যশঃপাণি সন্তুষ্ট হয়ে বোধিস্বত্ত্বকে বিচারকের পদে আসীন করলেন,কারন রাজা মনে করলেন সর্ব প্রাণীর প্রতি দয়া অনিকম্পা প্রদর্শনের জন্য তিনি একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি। যদিও বোধিস্বত্ত্ব আপত্তি জানান, কিন্তু রাজ আজ্ঞার কাছে নিজ ইচ্ছা- অনিচ্ছা তুচ্ছ, তাই তিনি এই পদ স্বীকার করেন। তিনি বিচারকের আসনে বসা অবধি মানুষের কোন ক্ষোভ,অভিযোগ রইলো না, সকলে সুবিচারের অধিকার ভোগ করতে লাগলো। এদিকে কালকের উৎকোচের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে, সে রাজার নিকট বোধিস্বত্ত্বের নামে নিন্দা শুরু করলো। সে রাজাকে বোঝাতে চাইলো, এবার ধর্ম্মধ্বজ রাজার সিংহাসন লাভের চেষ্টা করে রাজা হতে চাইবে। শুরু দিকে রাজা এই কুপ্ররোচনায় কান না দিলেও, ধীরে ধীরে তাঁর মনেও আশঙ্কা জন্ম নিতে লাগলো। একদিন কালক রাজাকে বললো,বোধিস্বত্ত্ব যখন রাজসভায় আসেন দেখবেন সমস্ত নগরী তার পদানত। সন্দেহ যখন একবার মাথাচারা দেয় তখন মানুষ মিথ্যাকেও সত্য মনে করে। তাই রাজা একদিন বাতায়ন দিয়ে লক্ষ্য করলেন, বিচারগৃহে প্রচুর বিচারপ্রার্থী, রাজা ভাবলেন এরা সবাই ধর্ম্মধ্বজের অনুচর। তিনি কালের কথায় ভীত হয়ে এখন কি করনীয় তাই চিন্তা করতে লাগলেন। কালক দেখলো এই সুযোগ সে রাজাকে উৎসাহিত করতে লাগলো বোধিস্বত্ত্বকে হত্যা করার জন্য।  কিন্তু গুরুতর কোন প্রমান না পেলে তো কাউকে প্রাণদন্ড দেওয়া যায় না। কালক রাজাকে পরামর্শের নামে কুউপায় দিতে লাগলো। সে রাজাকে বললো যে আপনি ওকে বলুন, একদিনের মধ্যে একটি মনোরম উদ্যান প্রস্তুত করতে, যা অসম্ভব।  ধর্ম্মধ্বজ কখনোই করতে পারবে না, তাহলে আপনি ওকে মৃত্যু দন্ড দেবেন। রাজাও  সেই মত বোধিস্বত্ত্বকে ডেকে সুরম্য উদ্যান প্রস্তুত করতে আদেশ দিলেন, অন্যথায় মৃত্যু নিশ্চিত। বোধিস্বত্ত্ব বুঝতে পারলেন এর পিছনে কার হাত আছে। তিনি রাজাদেশ শিরোধার্য করে গৃহে ফিরে আহারাদির পর শয়ন কক্ষে চিন্তান্বিত মনে শয্যা গ্রহন করলেন। এদিকে ওনার চিন্তার কারনে দেবরাজ শত্রুর ভবন( ইন্দ্রের) উত্তপ্ত হলো। শত্রু বুঝতে পারলেন বোধিস্বত্ত্বের বিপদ আসন্ন। তিনি দ্রুত বোধিস্বত্ত্বের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে তাঁর উৎকন্ঠার কারন জানতে চাইলেন।  বোধিস্বত্ত্ব ওনাকে চিনতে না পারলে শত্রু নিজের পরিচয় দিলেন। তখন তিনি জানালেন রাজা তাঁকে একদিনের মধ্যে মমোরম উদ্যান প্রস্তুত করতে বলেছেন তার প্রমোদের জন্য।  তাই চিন্তাগ্নি প্রজ্জ্বলিত।  শত্রু বোধিস্বত্ত্বকে বললেন, পন্ডিত আপনি চিন্তা করবেন না, আমি আপনাকে নন্দনকানন বা চিত্রালতা বনের সদৃশ উপবন প্রস্তুত করে দেবো। তখন শত্রু নির্দিষ্ট স্হানে অপূর্ব উদ্যান রচনা করে দেবলোকে প্রতিগমন করলেন। পরের দিন বোধিসত্ত্ব উদ্যান অবলোকন করে রাজাকে গিয়ে বললেন “ মহারাজ উদ্যান প্রস্তুত, আপনি প্রমোদ করুন”। রাজা সেই বিচিত্র উদ্যান দেখে হতবাক। অষ্ঠদশহাত প্রমান প্রাকার দ্বারা পরিবেষ্টিত,  দ্বার তোরনশোভিত এছাড়া বিভিন্ন পুস্প, ফলভারে সজ্জিত  নানা ধরনের বৃক্ষরাজি। তিনি অতিমাত্রায় বিস্মিত হয়ে ভাবতে লাগলেন এখন কি করনীয়। কালক তখন রাজাকে আরও উত্তেজিত করার জন্য বলতে শুরু করলো” মহারাজ, যে একরাতে এত বড় উদ্যান প্রস্তুত করতে পারে, তার পক্ষে আপনার সিংহাসন ছিনিয়ে নেওয়া এমন কি কঠিন কাজ।  আপনি তাকে আরও কঠিন কাজ দিন। তাকে বলুন একদিনে সপ্তরত্নময়ী পুস্করিণী প্রস্তুত করতে”।  রাজা কালকের কুবুদ্ধি তে প্রভাবিত হয়ে বোধিস্বত্ত্বকে সেই আদেশই দান করলেন। অন্যথায় প্রাণদণ্ড। শত্রু (ইন্দ্র) বোধিসত্ত্বের মঙ্গালার্থে অপূর্ব শোভাসম্পন্ন, পঞ্চবিধ পদ্মশোভিত, সপ্তরত্নময়ী নন্দনসরোবরের ন্যায় একটি পুস্করিণী প্রস্তুত করে দিলে, বোধিসত্ত্ব তা রাজাকে তা দেখিয়ে দিলেন। তখন কালক রাজাকে বললেন মহারাজ আপনি ওকে উদ্যানের ও পুস্করিনীর অনুরুপ গজদন্তশোভিত অট্টালিকা নির্ম্মান করতে আজ্ঞা দিন। হতবিহ্বল রাজা তাই বললেন নচেৎ মৃত্যু দন্ড। এবারও শত্রু অট্টালিকা নির্ম্মান করে দিলেন এবং বোধিসত্ত্ব তা রাজাকে দেখিয়ে দিলেন। কিছুতেই কোন ভাবে বোধিসত্ত্বকে পরাস্ত করতে পারলেন না। তিনি চিন্তায় পরে গেলেন। তখন কালক পরামর্শ দিলো গৃহের অনুরুপ একটা মনি সংগ্রহ করে দিতে, যা গজদন্তময় গৃহকে আলোকিত করবে।  এবারও দেবরাজের সহায়তায সেই মনিও সংগ্রহীত হলো ও গৃহকে আলোকিত করতে লাগলো। দুষ্ট কালক রাজাকে বোঝাতে লাগলো বোধিসত্ত্বের নিশ্চয় কোন ঈপ্সিত ফলদায়ী কোন দেবতা আছে, না হলে এই সব অসাধ্য কার্য করা কখনোই সম্ভব ছিলো না। অতএব, মহারাজ আপনি ওকে এমন কাজ দিন যা দেবতাদেরও অসাধ্য। চতুর্বিধ গুণসম্পন্ন কোন মানুষ দেবতারাও সৃষ্ট করতে পারে না, সুতরাং আপনি ওকে চতুর্বিধ গুনযুক্ত এক ঊদ্যান পালকের বন্দোবস্ত করতে বলুন। রাজা বোধিসত্ত্বকে ডেকে বললেন যে আপনি আমাকে উদ্যান, পুরস্করিনী, গৃহ, মনি সব এনে দিয়েছেন, এখন উদ্যানের পরিচর্যার জন্য  চতুর্বিধ গুন সম্পন্ন এক উদ্যান পালক যোগার কর দিন, নচেৎ গর্দান যাবে। এবার বোধিসত্ত্ব কিঞ্চিত দ্বিধায় পরলেন। কারন দেবরাজ শত্রু আত্মশক্তি বলে এতদিন অসাধ্য কাজকেও রুপদান করেছেন। কিন্তু এখন তো চতুর্বিধ গুনযুক্ত মানুষ সৃষ্ট করা তারও সাধ্যের অতীত। তাই তিনি চিন্তা করলেন জল্লাদের হাতে প্রাণ যাওয়ার থেকে অরণ্যে গিয়ে অনাথ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করা শ্রেয়। সেইমত তিনি কারও সাথে বাক্যালাপ না করে, প্রাসাদ হতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে বনে চলে গেলেনএবং একাকী এক বৃক্ষতলে ধ্যানে মগ্ন হলেন। কিন্তু শত্রুর কাছে কোন কিছু গোপন থাকে না, তিনি ধ্যানবলে জানতে পেরে, বনের মধ্যে বোধিসত্ত্বের কাছে এসে উপস্থিত হয়ে প্রশ্ন করলেন আপনি এখানে কেন। আপনি একজন সুকুমার,ব্যক্তি, কখনও দুঃখ ভোগ করেছেন বলে আপনাকে দেখে মনে হয় না। দেবরাজের প্রশ্নের উত্তরে বোধিসত্ত্ব বললেন যে তিনি সদ্ধর্ম্ম চিন্তা করার জন্য এখানে এসেছেন। শত্রু জানতে চাইলেন সদ্ধর্ম্ম চিন্তাই যদি উদ্দেশ্য হয় তাহলে এখানে বসেই বা কেন, সে তো যে কোন জায়গায় করা যায়। তখন বোধিসত্ত্ব তাকে খুলে বললেন, এবার রাজা চতুর্বিধ গুনযুক্ত এক উদ্যানপালক নিযুক্ত করতে বলেছেন নচেৎ মৃত্যু দ্ন্ড। কিন্তু এরুপ কোন ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছি না। তাই রাজধানীতে থেকে মানুষের হাতে প্রান দেয়ার চেয়ে অরণ্যে এসে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া শ্রেয়। তখন শত্রু তাকে জানালেন তিনি আগে বোধিসত্ত্বের জন্য যা করেছেন তা সম্ভবপর ছিলো কিন্তু রাজার নির্দেশিত উদ্যানপালক সৃষ্টি করা কারও সাধ্য নয়। তবে আপনাদের দেশে ছত্রপাণী নামে এক ব্যাক্তি যিনি রাজার মুকুট, শিরোভূষণ তৈরী করে, ওই মহাত্মা চতুবিধ গুণ বিশিষ্ট।  আপনি ওকেই উদ্যানপালক হিসাবে নিযুক্ত করুন। একথা বলে দেবরাজ শত্রু বোধিসত্ত্বকে অভয় দান করে দেবনগরে প্রস্হান করলেন। বোধিসত্ত্ব গৃহে ফিরিয়া আহারাদি সমাপন করে রাজসভার দিকে গমন করার সময় পথে ছত্রপাণিকে দেখতে পেয়ে  তাঁর হাত ধরে জিজ্ঞেসা করলেন, ভাই আপনি নাকি চতুর্বিধ গুন বিশিষ্ট।  ছত্রপাণি আশ্চর্য হয়ে জানতে চাইলেন এ সংবাদ পন্ডিত কি ভাবে জানতে পারলেন। তখন বোধিসত্ত্ব তাঁকে আনুপূর্বিক রাজার  বিভিন্ন আদেশের বিষয়ে সমস্ত বৃত্তান্ত বর্ননা করলেন এবং তাঁকে অনুরোধ করলেন ওনার সাথে রাজার কাছে যাবার জন্য। ছত্রপাণী স্বীকার করলেন যে তাঁর চতুর্বিধ গুন আছে। তিনি বোধিসত্বের অনুরোধে তার সাথে রাজা দরবারের দিকে প্রস্হান করলেন।

৷৷৷৷৷৷৷৷ ২৷ ৷৷৷৷৷৷ ো

এবার এই জাতক কথার মধ্যে প্রবেশ করলেন আর একটি চরিত্র, যার নাম ছত্রপাণী। শুরুতে আমরা চারজনের নাম জেনেছি, রাজা যশঃপাণি, রাজপুরোহিত ধম্মধ্বজ, সেনাপতি কালক এবং রাজার মুকুট প্রস্তুত কারক ছত্রপাণী। এখন আমরা এই ছত্রপাণী কি ভাবে চতুর্বিধ গুণসম্পন্ন হলেন তার অতীত জন্মের কথা থেকে জানতে পারবো।

ছত্রপাণীকে বোধিসত্ত্ব রাজা যশঃপাণীর কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, “মহারাজ এই আপনার চতুর্গুন সম্পন্ন উদ্যান পালক” রাজার প্রশ্নের উত্তরে ছত্রপাণী স্বীকার করলো যে সে চতুর্গুন সম্পন্ন।  তখন রাজা জানতে চাইলেন, তার কি কি গুন আছে। ছত্রপাণী ব্যাখ্যা করলো ১) সে কখনও অসূয়াবশ হন না, অর্থাৎ হিংসা করে না ২) সে কখনও মাদক সেবন করে না ৩) স্নেহের দ্বারা পীড়িত হয় না, আর ৪) ক্রোধের দ্বারা চিত্তের বিকার ঘটে না।  মহারাজ এই হলো আমার চতুর্গুণ।  ছত্রপাণীর কথা শুনে রাজা যশঃপাণী আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করলেন “ তুমি কখনও অসূয়া করো না, তা কি ভাবে সম্ভব। কি ভাবে তুমি অসূয়া ত্যাগ করলে”? তখন ছত্রপাণী তার পূর্ব জন্মের কাহিনী শুরু করলেন।

পূর্বজন্মে ছত্রপাণী, বর্তমান রাজা যশঃপাণীর মত, বারানসীর একজন রাজা ছিলেন। কিন্তু এক  কামিনী মোহে পরে, তার চক্রান্তে নিজের পুরোহিতকে বন্দী করেছিলেন। সেই সময় তাঁর মহিষী চতুঃষষ্টি এক রাজভৃত্যের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত ছিলেন এবং বোধিসত্ত্ব রাজপুরোহিতকেও প্রলুব্ধ করেছিলেন কিন্তু সফল হন নি। তাই মহারাণী তার বিরুদ্ধেই রাজার কাছে পরীবাদ অর্থাৎ পরোক্ষে নিন্দা করতে শুরু করলেন, সেইজন্য রাজা পুরোহিতকে রাণীর কথায় বন্দী করেন। তবে বোধিসত্ত্ব তাকে যখন প্রকৃত ঘটনা বুঝিয়ে বললেন তখন রাজা তাকে মুক্ত করেন এবং  বোধিসত্ত্বের করুনায় ও অনুরোধে সেই চতুঃষষ্টি ভৃত্য ও মহিষী পর্যন্ত রাজার ক্ষমা প্রাপ্ত হন। পূর্ব জন্মে তিনি ছিলেন সেই  নৃপতি। তিনি আরও বললেন, ষোড়শ সহস্র রমণীগনকে ত্যাগ করে এক রমণীতে আসক্ত হয়েও তিনি তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন নি। রাণীর ক্রোধ ও কাম ছিলো দুর্দ্দমনীয়। পরিহিত বস্ত্র মলিন হলে, তা কেন মলিন হলো, অথবা ভুক্ত অন্ন্ কেন পুরীষ হলো এ সব ভাবার যেমন কোন কারন নেই তেমনি রমণীর ক্রোধেরও কোন কারন নেই। ছত্রপাণী বললেন, “তাই আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমি কোনদিন অসূয়ার বশীভূত হবো না।“ কারন অসূয়া বশতঃ তিনি পুরোহিতকে কারারুদ্ধ করেন। অর্হত্ব লাভে যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে, তাই তদবধি তিনি অসূয়া ত্যাগ করতে শেখেন। এরপর রাজা যশঃপাণী জানতে চাইলেন মাদককে কি ভাবে ত্যাগ করলেন।

এরপর ছত্রপাণী তার মাদক ত্যাগের, তার পূর্ব জন্মের কথা শুরু করলেন। যা পালি টিকাকারেরা এভাবে বর্ণনা করেছেন।

পুরাকালে ছত্রপাণী রাজা যশঃপাণীর মতই বারানসীর রাজা ছিলেন। তিনি অত্যন্ত মদ্যপায়ী ছিলেন। মাদিরা বিনা তিনি এক মূহুর্ত থাকতে পারতেন না। আার মাংস ছাড়া আহার করতে পারতেন না। সেই সময় বারাণসীতে একদিন পশুহত্যা নিষিদ্ধ ছিলো। তাই পাচক পূর্ব দিনই কিছু মাংস সংগ্রহ করে রাখতো। কিন্তু সেদিন অসাবধানতা বশতঃ সেই  মাংস কুকুরে খেয়ে ফেলে। ফলে পাচক প্রমাদ গুনতে লাগলো, তবুও অন্য দিনের মত সুস্বাদু বহু ব্যঞ্জন প্রস্তুত করে, মহারাণীর কাছে  মাংসহীন ব্যঞ্জন নিয়ে উপস্থিত হলেন এবং মাংস না থাকার প্রকৃত কারণও তাকে বললেন। পাচক অতিশয় ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে রাণীর কাছে এখন কি করা যায় তার উপায় জানতে চাইলেন। রাণীও খুবই সরলমতি ছিলেন, তিনি জানতেন রাজা তার পুত্রকে অসম্ভব ভালোবাসেন, তাই  তিনি পাচককে বললেন “ আমি পুত্রকে সাজিয়ে রাজার কোলে দেবো, তিনি ছেলেকে দেখলেই সব ভুলে গিয়ে তাকে আদর করতে শুরু করবেন, তুমি সেই  অবসরে মাংসবিহীন খাদ্য সম্ভার রাজার সামনে পরিবেশন করো, তা হলে তিনি কিছু টের পাবেন না।“ সেই  মত রাণী তার পুত্রকে সুসজ্জ্বিত করে রাজার কোলে দিলে রাজা তাকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠলেন। ইত্যবসরে পাচক রাজার সামনে প্রস্তুত খাদ্য পরিবেশন করলো, যার মধ্যে মাংস ছিলো না। রাজা তার পুত্রের সাথে খেলা করছিলেন, সাথে সাথে মদ্যপানেরও আনন্দ নিচ্ছিলেন। যার মনের মধ্যে ক্রোধ, লালসা, তৃষ্ণা ভরপুর  তার কাছে তো কোন স্নেহ, কোন মানবিক বন্ধনই কোন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তৃষ্ণার অগ্নিতে মানুষ শুধু নিজে জ্বলে না অন্যকেও দগ্ধ করে। তেমনি এই রাজার ক্ষেত্রেও তার ভিন্নতা হলো না। তিনি পুত্রকে কোলে নিয়ে বসেও, কেন তার খাদ্য বস্তুর মধ্যে মাংসা নেই  তিনি চিৎকার করে জানতে চাইলেন। পাচক ভয়ভীত হয়ে উত্তর দিলো যে আজ পোষক দিন পশুবধ নিষিদ্ধ তাই মাংস সংগ্রহ করা যায় নি। তাই শুনে ক্রোধে অন্ধ হয়ে গিয়ে রাজা এরপর যা করলেন তা অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্য।  তিনি মাংসহীন খাদ্যবস্তু দেখে এতটাই উন্মাদগ্রস্ত হয়ে উঠলেন, ক্রোড়স্হিত পুত্রের ঘাড় ভেঙে পাচকের সামনে ফেলে দিয়ে বললেন, যাও এই মাংস পাক করে নিয়ে এসো। পাচক ভয়ে আতঙ্কে তাই করে নিয়ে এলো কম্পিত হস্তে। রাজা ক্রোধে এত অন্ধ ছিলেন, তাকিয়ে দেখলেন না যে তিনি নিজের পুত্রকেই বধ করে তার মাংস খেতে চাইছেন। মদিরা সেবনে তার স্নায়ু এত বিকল হয়ে গেছিলো তার দৃষ্টির স্বচ্ছতা এতদূর নষ্ট হয়ে গেছিলো যে তিনি কার ঘাড় মটকে দিলেন, সেটা অনুধাবন ও অনুভব করার মত শারিরীক ও মানসিক শক্তি ও ধৈর্য্য কোনটাই তার ছিলো না। রাজার ভয়ে তখন কেউ ক্রন্দনও করতে পারছিলো না, সমস্ত পরিবেশটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছিলো।  প্রত্যুষে রাজার যখন নেশা ভঙ্গ হলো, তিনি “কোথায় আমার পুত্র “ বলে তাকে খুঁজতে লাগলেন। তখন রাণী আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে কাঁদতে শুরু করলেন এবং রাজার পদতলে পরে কালকের ঘটনার আনুপূর্বিক বিবরণ দিলেন যে, তিনি সুরায় মত্ত হয়ে নিজ পুত্রের প্রান হরন করে তারই মাংস ভক্ষন করেছেন। রাজা নিজের এই আচরনের জন্য এতটাই অনুতপ্ত ছিলেন যে মুখে ছাই ঘষে প্রতিজ্ঞা করলেন, আর কোনদিন, কখনোই তিনি সুরা পান করবেন না, কারন তিনি দেরীতে হলেও বুঝতে পেরেছিলেন তার এই বিভৎস আচরনের জন্য মদ্যপানের অভ্যাসকেই দায়ী করলেন। কারন মদিরা সেবন কখনোই মানুষকে কুশল কর্মের দিকে নিয়ে যায় না, এর পরিনতি অতি ভয়ংকর।  সুরা পানে আসক্ত থাকলে তিনি অর্হত্ব লাভ করতে পারবেন না। সেই থেকে তিনি মাদক সেবন থেকে বিরত হলেন।

এরপর রাজা যশঃপাণী তাকে প্রশ্ন করলেন তোমার স্নেহবর্জ্জনের হেতু কি? তখন ছত্রপাণী তার আরও এক পূর্ব জন্মের কাহিনী রাজাকে শোনালেন কেন এবং কি ভাবে তিনি স্নেহ, মোহ থেকে নিজেকে মুক্ত করছিলেন।

ছত্রপাণীর তাঁর অতীত জন্মের কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেলেন, মহারাজ আমি অতীতে বারানসীতেই রাজত্ব করতাম। তখন আমার নাম ছিলো কৃত্তবাসা। আমার পুত্র সন্তান জন্মানোর পর দৈবজ্ঞরা তার লক্ষন পরীক্ষা করে বলেছিলেন যে, সে জলের অভাবে প্রাণ ত্যাগ করবে। চঞ্চল স্বভাবের পুত্রের নাম ছিলো দুষ্ট কুমার। বয়ঃপ্রাপ্তির পর সে উপরাজের দায়িত্ব পালন করতে লাগলো। রাজা কৃত্তবাসা তাকে সব সময় নিজের সাথে রাখতেন, যাতে পাণীয়ের অভাবে তার প্রাণ বিয়োগ না হয়। সেই জন্য তিনি নগরের চতুর্দিকে, মধ্যস্হলে পুস্করিণী খনন করিয়েছিলেন,  রাস্তার চতুষ্কে মন্ডপ করে সেখানে পাণীয় জলের কলসীর বন্দোবস্ত করেছিলেন। যাতে তার পুত্র বিনা জলে প্রাণ ত্যাগ না করে। কিন্তু সে ছিলো অতি দুর্বিনীত।  একদিন সে বিচিত্র বেশভূষা পরে হাতির পিঠে চড়ে উদ্যানে প্রবেশ করলে। সে দেখলো পথে “ পচ্চেক বুদ্ধ” কে দেখে সবাই খুব সন্মান করছে, কেহ দূর থেকেই প্রনাম করছে, কেহ ভিক্ষাপাত্রে দান দিচ্ছে। এই দেখে সেই দুষ্টকুমার মনে মনে কুপিত হলে, ভাবলো আমি এত সুন্দর বেশভূষা পরে এসেছি, অথচ আমার দিকে কেউ ফিরে তাকায় না আর ওই মুন্ডিত মস্তক ভিক্ষুকে এত সন্মান। ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে হস্তীপৃষ্ট থেকে অবতরন করে সোজা পাচ্চেক বুদ্ধের কাছে গিয়ে তাঁকে কোনরুপ অভিবাদন না করে জিজ্ঞেসা করলো “ তুমি ভিক্ষা পেয়েছো?” পাচ্চেক বুদ্ধ জানালেন তিনি ভিক্ষা পেয়েছেন। তখন কুমার রাগে তার হাত থেকে ভিক্ষাপাত্র নিজে মাটিতে আছাড় মেরে তাকে টুকরো টুকরো করে দিলো। তার মধ্যে যে খাদ্য বস্তুগুলো ছিলো ভগ্ন পাত্রের সাথে সেগুলোকেও পদদলিত করে দূরে নিক্ষেপ করলো। বুদ্ধ বলে উঠলেন “ আহা, এই জীবগুলো বিনষ্ট হলো”। একথা বলে পাচ্চেক বুদ্ধ যখন কুমারের মুখাবলোকন করলেন, সে আরও কুপিত হয়ে উচ্চস্বরে বলে উঠলো, “ আমি রাজা কৃত্তবাসে পুত্র দুষ্টকুমার, তুমি ক্রুদ্ধ হয়ে আমার কোন অনিষ্ট করতে পারবে না”। এমনিতেই পাচ্চেক বুদ্ধ কম কথার ভিক্ষু,  ভোগ্যবস্তুর থেকে বঞ্চিত হয়ে, তিনি যোগ বলে আকাশ মার্গ দিয়ে হিমালয়ের নন্দপর্বতের মূলে এক গুহায় চলে গেলেন। তাঁর প্রস্হানের সাথে সাথেই, দুষ্টকুমারের পাপের পরিনাম দেখা দিলো। তার সমস্ত শরীর জ্বলে যেতে লাগলো। কুমার চিৎকার করে “ পুড়ে গেলো, জ্বলে গেলো” বলে চিৎকার করতে করতে পথমধ্যেই পড়ে গেলো। চারপাশের সমস্ত জলাশয় শুকিয়ে গেলো, এমন কি পয়ঃপ্রনালী অবধি জলশূন্য হয়ে গেলো। কেউ যে তাকে জল দিয়ে দহন জ্বালা থেকে শান্ত করবে, তার উপায় রইলো না। কুমার সেখানেই  বিনষ্ট হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হয়ে নরক গমন করলো। পুত্রের মৃত্যু সংবাদে রাজা শোকে অভিভূত হয়ে ভাবতে লাগলেন, আমার অতিরিক্ত অপত্য স্নেহ এর মূল কারন।আমি যদি এত স্নেহ পরায়ন না হতাম, তাহলে সন্তনের মৃত্যু দেখতে হতো না। এই শোক প্রিয় বস্তু থেকেই উৎপন্ন। ছত্রপাণী বললো মহারাজ, তখন থেকেই আমি আর কোন চেতন অচেতন কোন পদার্থেই সঞ্জাত স্নেহ হই না। মহারাজ যশঃপাণী ছত্রপাণীর পূর্ব জন্মের অভূতপূর্ব কাহিনী শুনে মোহিত হয়ে গেলেন। পরিশেষে রাজা  প্রশ্ন করলেন “ তাহলে তুমি ক্রোধ কি ভাবে ত্যাগ করলে” সে বৃতান্ত আমাদের বলো”.।  তখন ছত্রপাণী জানালেন তিনি পূর্ব জন্মে ‘অরক’ নাম নিয়ে জন্ম গ্রহন করেছিলেন। সেই সময় তিনি সপ্তবর্ষ মৈত্রী ভাবনা করেছিলেন অনবরত। ফলস্বরূপ সপ্তকল্প ব্রাহ্মলোকে বাস করেছিলেন। তাই তিনি মৈত্রীর দ্বারা ক্রোধ কে জয় করতে পেরেছেন। এইভাবে তিনি চতুর্গুণ সম্পন্ন হতে পেরেছেন।

ছত্রপাণী নিজের চতুর্গুনের ব্যাখ্যা করলে রাজা তার অনুচরদের ইশারা করলে, তারা কালককে হাত পা বেঁধে ফেললো। উপস্হিত আমাত্য, ব্রাহ্মণ্, গৃহপতি, সকলেই কালককে “উৎকোচখাদক,বদমাশ, দুষ্ট চোর, তুই উৎকোচ লাভ করতে না পেরে ধর্মধ্বজ্জের নামে  পরীবাদ ( অপবাদ) দিয়ে পন্ডিতের প্রান সংহার করতে চাস” ইত্যাদি কথা বলে তাকে তিরস্কার করতে লাগলো। কালকে প্রাসাদের বাইরে নিয়ে এসে পাথর, মুগুর যে যা পারলো তাই দিয়ে প্রহার করে তার মস্তক চূর্ণ  করে দিলে তৎক্ষনাৎ তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহকে সবাই  মিলে ধরে আবর্জনার স্তুপে ফেলে দেয়।

এই কাহিনীর শেষে তথাগত বললেন, সেই জন্মে তিনি ছিলেন পন্ডিত ধর্ম্মধ্বজ্জ আর সারিপুত্ত ছিলেন ছত্রপাণী এবং কালক ছিলেন দেবদত্ত। দেখা যাচ্ছে দেবদত্ত জন্ম-জন্মান্তর ধরে শুধু তথাগতের হানি করার চেষ্টাই চালিয়ে গেছেন, সফল হতে পারে নি। এই কাহিনীতে আমরা দেখতে পাই শাস্তা তাঁর শ্রাবকগনকে এই শিক্ষাই দিতে চেয়েছেন যে, যে বা যারা অন্যকে প্ররোচিত করে কাউকে হত্যা করার জন্য, তার ক্ষতি হয় বেশী। কারন অপরের জন্য গর্ত খুঁড়লে সেখানে নিজেকেই পড়তে হয়, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। শুধু তাই  নয় গৌতম বুদ্ধ মনুষ্যকে নিয়ন্ত্রিত জীবন পালনের উপদেশই দিয়েছেন বিভিন্ন ভাবে, নানা সূত্রের মাধ্যমে এবং যা পঞ্চশীলে উল্লেখিত আছে। এই কহিনীতেও আমরা সেই অনিয়ন্ত্রিত জীবনের ভয়াবহ পরিনতি দেখতে পাই। আজ পুরো বিশ্বের সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখলে আমরা দেখতে পাই শুধু ব্যাভিচার, মাদক সেবন। এক বিপজ্জনক কৃষ্ণ কালের সম্মুখীন আমরা, যুব সমাজ। তারা কি করছে নিজেরাও অজ্ঞাত। অবিদ্যার চাশমা,এমন ভাবে, শুধু চর্ম চক্ষু নয়, মানসিক দৃষ্টিকেও ঢেকে রেখেছে যে, তারা পথভ্রষ্ট, দিশাহীন, তাদের জীবনের একমাত্র মোক্ষ শুধু মাত্রহীন শারীরিক ভোগ। জীবন কেবল অনিত্য নয়, জীবন ক্ষনস্হায়ীও। নিয়ন্ত্রহীন ভোগবাদ কখনোই তৃপ্তির আস্বাদ দেয়না। তৃষ্ণা  অসীম, তাকে বেঁধে রাখার একমাত্র উপায় তথাগত গৌতম বুদ্ধের  পথে চলা, তার দর্শনকে জানা, ওনার উপদেশকে উপলব্ধি করে তা পালন করা। বুদ্ধ আছেন আমাদের উপলব্ধিতে, আমাদের মননে, চিন্তনে, ইতিহাসে, বিজ্ঞানে। বুদ্ধের অস্তিত্ব সমগ্র ভূমন্ডল ছাড়িয়ে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে বিস্তৃত। সর্বোপরি তিনি আছেন আমাদের অন্তরে। তাকে প্রজ্বলিত করার কথাই তো তিনি মহাপরিনির্বান সূত্রে বলে গেছেন। তাই  আমাদের বারবার বুদ্ধের শরন নিতে হবে কারন বুদ্ধের শরন নেওয়া মানে জ্ঞানের, প্রজ্ঞার শরনই আমরা নিচ্ছি।

পরিশেষে উল্লেখ করবো বুদ্ধের ধম্মপদের গাথা দিয়ে দিসো দিসং যং তং কয়িরা বেরী বা পন বেরিনং, মিচ্ছাপণিহিতং চিত্ত্ং পাপিয়ো নং ততো করে ( চিত্তবগ্গ ১০ নং গাথা) শত্রুর শত্রুতা যত না অনিষ্ট করে, মিথ্যায় আকৃষ্ট চিত্ত তার থেকেও বেশী অনিষ্ট করে।

 

আলপনা বসু

কাঁকুড়গাছি,  কলকাতা ৫৪

 

 

About The Author

Tridib

An Education and Religious Book Publisher based in Delhi (India) associated with prominent Buddhist organisations and temple associations, including Mahabodhi Mahavihara Temple, Bodh Gaya (Bihar) India. Created this website "baruasamaj.com" in the year 2010-11 with a view to bring the members of Barua community to a common platform, and to make available all relevant information about the community.

Leave a reply

Your email address will not be published.

Follow Us

Recent Videos

Loading...